স্থান: কলকাতা | সময়: বর্ষাকাল | পাত্র: রুদ্র, এক উঠতি সাংবাদিক

অদ্বৈত ভিলার দরজায়: মৃতদের শহরে একার পদধ্বনি
> “চিঠিটা কেউ পাঠায়নি, কিন্তু অদ্বৈতের আর্তনাদ হয়তো আজও বাতাসে ভেসে বেড়ায়…”
এই পর্বে, রুদ্র মুখোমুখি হয় এক ভূতুড়ে ভিলার, এক ধ্বংসস্তূপের — যেখানে সময় থমকে আছে ১৩ই আগস্ট, ১৯৪৭-তে।
এক মৃত্যুপুরীর ঠিকানায় – ৫৭, শম্ভুনাথ পাড়া
রুদ্রের হাতে ছিল ঠিকানা—৫৭, শম্ভুনাথ পাড়া।নাগরিক নথিতে জায়গাটিকে ‘পরিত্যক্ত’ বলা হলেও বাস্তবে সেখানে পৌঁছনো সম্ভব ছিল।গঙ্গার পাশ ঘেঁষে হেঁটে, এক সরু গলি ধরে এগোতেই চারপাশের শহর যেন মিলিয়ে যেতে থাকে। একসময় সে পৌঁছায় বিশাল এক লোহার গেটের সামনে। গেটের ওপরে রঙচটা একটি ফলকে লেখা—
> “অদ্বৈত ভিলা”
গেট খোলা। কেউ যেন অপেক্ষা করছিল।
ভেতরে যা ছিল…
চোখে পড়ার মতো বিষয় হলো—ভবনটি পুড়ে যাওয়া হলেও কিছু অংশ অক্ষত।
পুরনো দেয়ালে ছিল কাঠের দরজা, যার গায়ে যেন আঁচড়ের দাগ।
রুদ্র পা বাড়ায়।
ভেতরে ঢুকতেই হঠাৎ যেন বাতাস ভারী হয়ে আসে। তার ক্যামেরা, যা সঙ্গে এনেছিল সব ডকুমেন্টেশন করার জন্য, আচমকা বন্ধ হয়ে যায়।একটা ঘরের দরজা খানিকটা খোলা।
ভেতরে ঢুকেই সে দেখে—মেঝের উপর ছড়িয়ে আছে পুরনো কিছু কাগজ, পোড়া ডায়েরি…
আর একটি চেয়ার, যেটা অদ্ভুতভাবে এখনও ঠিকঠাক।
হঠাৎ…
ঠক ঠক ঠক!
পেছনে তাকিয়ে
কেউ নেই।কিন্তু ঘরের এক কোণে সে দেখতে পায়…
একটা কালো স্যুট পরা ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে আছে আয়নার মধ্যে, কিন্তু বাস্তবে কিছুই নেই।
অদ্বৈতের গলার শব্দ?
রুদ্র যখন বেরোতে যাবে, তখনই দেয়ালে এক নতুন লেখা ভেসে ওঠে—
> “তুমি এসে গেছো… মুক্তি দাও!”
তারপর, হাওয়ার ঝাপটায় কাগজপত্র উড়ে যেতে থাকে, যেন কেউ চায় না সত্য সামনে আসুক।
রুদ্রের ক্যামেরা… আর তার ভেতরের ছবি
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে সে দেখে, ক্যামেরা আবার কাজ করছে।
বাড়ির বাইরে এসে ছবি চেক করতে গিয়ে রুদ্র চমকে ওঠে—
একটি ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে এক বৃদ্ধ, রক্তাক্ত জামা পরে তাকিয়ে আছেন তার দিকে। পেছনে লেখা—
“১৩ই আগস্ট, ১৯৪৭”
এই কি অদ্বৈত সেন?
রুদ্র জানে, সে এখন শুধুই একজন সাংবাদিক নয়—সে একজন সাক্ষী।
একটি অভিশপ্ত আত্মার শেষ ইচ্ছার বাহক।
পরবর্তী পর্বে: অদ্বৈতের হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস কি লুকিয়ে আছে কারও পরিবারে?
চোখ রাখুন ব্লগে।আর যদি আপনি কখনও ৫৭, শম্ভুনাথ পাড়ার পাশে গিয়েও থাকেন, জানাতে ভুলবেন না—
আপনি কি কিছু শুনেছিলেন…?
পূর্ববর্তী পর্ব: অদ্বৈতের ডায়েরি পড়ুন
পরবর্তী পর্ব:
আত্মা মুক্তি চায়, কিনা—জানতে হলে…