স্থান: কলকাতা | সময়: বর্ষাকাল | পাত্র: রুদ্র, এক উঠতি সাংবাদিক

অদ্বৈতের ডায়েরি: ৫৭, শম্ভুনাথ পাড়ার অভিশাপ
কলকাতার এক বর্ষার রাতে পাওয়া এক রহস্যময় চিঠি রুদ্র নামক এক তরুণ সাংবাদিককে টেনে নিয়ে যায় অতীতের এক ভয়াল ইতিহাসের সামনে। আপনি যদি প্রথম পর্ব মিস করে থাকেন, পড়ে নিন: পুরনো চিঠির গন্ধ
এখন শুরু হচ্ছে পরবর্তী অধ্যায়ের এক রোমহর্ষক যাত্রা—
রাতের অস্বস্তি আর অদৃশ্য চিঠি
রুদ্র সারারাত ঘুমাতে পারেনি। জানালার কাঁচে সেই টোকা দেওয়ার শব্দ, দেয়ালে ভেসে ওঠা “৫৭” সংখ্যাটি, আর সবচেয়ে অদ্ভুত—চিঠির হঠাৎ গায়েব হয়ে যাওয়া—সবকিছু মিলিয়ে তার ভেতরে জন্ম নিয়েছিল এক গভীর আতঙ্ক।
তার হাতে ছিল সেই পুরনো ডায়েরি। স্যাঁতসেঁতে গন্ধে ভরা বাদামি মলাটের ভেতর লেখা ছিল এমন কিছু কথা, যা নিছক কল্পনা বলে উড়িয়ে দেওয়া কঠিন।
“এই ডায়েরি আমার আত্মার সাক্ষ্য…”
ডায়েরির প্রথম পাতায় অদ্বৈতের নিজের হাতে লেখা একটি বার্তা:
> “এই ডায়েরি আমার আত্মার সাক্ষ্য। ১৯৪৭ সালে যা ঘটেছিল, তার ইতিহাস কেউ জানে না। কিন্তু সত্যি তো মাটির নিচে চাপা দিয়েও চিরকাল চাপা থাকে না।”
এই লাইন পড়ে রুদ্র বুঝে গেল—এটা শুধু অতীত নয়, এটা হয়তো এক আত্মার আর্তনাদ।
আরও কিছু পাতা উল্টিয়ে সে পড়ে:
> “স্বাধীনতা আসছে, চারদিকে উল্লাস, কিন্তু আমার বাড়িতে শুধু কান্না। আমি জানি, আমার দিন ফুরিয়েছে। আমার কিছু শত্রু আছে যারা চাইছে আমি মরে যাই। আজ রাতে যদি কিছু হয়, তবে এই চিঠি আমার শেষ কথা হয়ে থাকবে।৫৭, শম্ভুনাথ পাড়া… এখানেই সব শেষ হবে।”
রুদ্রের গা ছমছম করে ওঠে। এই লেখাগুলি নিছক গল্প নয়—এ যেন একটি মরিয়া মানুষের শেষ আর্তি।
চিঠি উধাও… আর অনুসন্ধান শুরু
রুদ্র স্পষ্ট মনে করতে পারে—চিঠিটা ডায়েরির ভেতরে ছিল। কিন্তু এখন সেটা নেই। উধাও হয়ে গেছে!কীভাবে? কে নিল? নাকি… কিছু?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই রুদ্র সিদ্ধান্ত নেয়, সে অদ্বৈতের পরিচয় জানবেই।
সত্যের সন্ধানে: শম্ভুনাথ পাড়ার ধ্বংসাবশেষ
সারাদিন রুদ্র সময় কাটায় পুরনো নথি, ম্যাপ, আর ব্রিটিশ আমলের রেকর্ড ঘেঁটে। আর সন্ধ্যায় তার হাতে আসে একটি নাম—
“শম্ভুনাথ পাড়া” — উত্তর কলকাতার গঙ্গার ধারে এক পুরনো এলাকা।
বিস্ময়ের বিষয়, স্বাধীনতার ঠিক আগের রাতে—১৩ই আগস্ট, ১৯৪৭—সেই অঞ্চল রহস্যজনকভাবে আগুনে পুড়ে যায়। সরকারিভাবে জায়গাটিকে “পরিত্যক্ত” ঘোষণা করা হয়।
আর সেখানেই ছিল এক সময়ের এক প্রাসাদোপম ভিলা—
“অদ্বৈত ভিলা”
ঠিকানা: ৫৭, শম্ভুনাথ পাড়া
রহস্য আরও ঘনীভূত
রুদ্রের মনে এখন কেবল একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে
—যদি চিঠিটা কেউ কখনও পাঠায়নি, তাহলে সে সেটা পেল কীভাবে?
আর এই প্রশ্নের উত্তরই হয়তো নিয়ে যাবে তাকে এক ভয়ংকর অতীতের মুখোমুখি, যেখানে অদ্বৈত সেনের মৃত্যু শুধুমাত্র ইতিহাস নয়, বরং এক অভিশপ্ত রহস্য!
আপনিও কি জানেন এমন কোনো পুরনো ঠিকানার গোপন গল্প?
কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।
আর গল্পের পরবর্তী অংশ জানতে চোখ রাখুন আমাদের ব্লগে—
কারণ সব চিঠি পাঠানো হয় না, কিছু চিঠি নিজেই এসে পৌঁছে যায়…
2 Comments on “বাংলা ভৌতিক উপন্যাস: চিঠিটা কেউ পাঠায়নি – এক আধুনিক কাহিনী যা রহস্য, অতিপ্রাকৃত আর ঐতিহাসিক পটভূমিতে মোড়া।”
Comments are closed.